ছোটবেলা বইয়ে পানাম নগরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মনে নানা জল্পনা-কল্পনার বিস্তার ঘটাতো। হলফ করে বলতে পারি, আপনাদের অনেকেরই এমন মনে হত। কৈশোরের দূরন্ত মন, এ তো দুর্নিবার। যাহোক, ছোটবেলাতে বেড়াতে যাবার গভীর আগ্রহ থাকলেও যেতে পারেনি।
২০১৮ সাল, সবে ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। সোনারগাঁও ঢাকার খুব কাছেই। ছোটবেলার খায়েশগুলো আগে পূর্ণ করি। আমার দুই কাজিন। একজন নাটোর বাউয়েটে পড়ে; ঢাকায় বেড়াতে আসছিল, আরেকজন বুয়েটে পড়ে, সাথে আমি! এই তো তিনজন মিলে রওনা দিলাম বাংলার প্রাচীন রাজধানীর পথে।
চলুন তবে শুরু করা যাক!
পানাম নগরে কি কি দেখবেন?
বাংলার প্রাচীন এবং প্রথম রাজধানী ছিল সোনারগাঁও। ১৫ শতাব্দিতে ঈসা খাঁর শাসনামলে রাজধাণী স্থাপিত হয় যা কিনা কয়েক শতাব্দী জুড়ে বাংলার রাজধানী ছিল। সেসময় তা শুধু রাজধানী নয় বরং প্রাচীন বাংলার প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র ছিল।
ব্যাবসা-বানিজ্যের সিংহভাগই এই নগরী দিয়ে সম্পন্ন হতো। ইউরাোপ থেকে বণিকেরা এসে থাকত।
নগরীর তিন দিক নদী দ্বারাবেষ্টিত ছিল যা এই নগরীকে ব্যবসা-বানিজ্যের কেন্দ্রে পরিনত করেছিল। এই নদীপথেই ইউরোপে বাংলার বিখ্যাত মসলিন রপ্তানি হত; যে কাপড়ে জয়জয়কার হতো ইউরোপের রাজপ্রাসাদ।
আমি জানি, আপনি বিখ্যাত এই নগরীর কথা শুনতে উন্মুখ হয়ে আছেন। না হওয়ার তো কোনো কারন নেই, এ যে আমাদের শ্বাশ্বত গর্বগাঁথা ?।
পানাম নগরের প্রাচীন স্থাপনা
প্রাচীন এই নগরীর মুল ও প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর স্থাপত্যশৈলী।
স্থাপত্য নিদর্শন পানাম সিটিকে অন্য সব প্রাচীন নিদর্শন থেকে আলাদা করেছে। অনন্য স্থাপত্যশৈলী পানাম নগরীকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতহ্যের অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। শুধু তাই নয় ২০০৬ সালে “ওয়ার্লড মনুমেন্ট ফান্ডের” সেরা ১০০ টি ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় বাংলার প্রাচীন এই রাজধাণী জায়গা করে নিয়েছে।
অনন্য সৌন্দর্যমন্ডিত প্রাচীন এই নগরী একসময় সোনারগাঁয়ের ২০ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। কালের পরিক্রমায় তা হারিয়ে গেছে। সেই সুবিশাল স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ এখন টিকে আছে।
হারানো নগরীর অবশিষ্ট অংশটুকুই এখন সুবিশাল সেই নগরীর সাক্ষী হিসাবে দাড়িয়ে আছে। শুধু সাক্ষী হিসাবেই নয়, তা প্রাচীন পানাম সিটি গৌরবময় ঐতিহ্য, ব্যবসা-বানিজ্যে বাংলার এককালের একচ্ছত্র্য আধিপত্য বিশ্বখ্যাত মসলিন কাপড়ের গৌরবগাঁথায় ভাস্বর এক অতীত ঐতিহ্যকে বুকে লালন করে চলেছে।
পানাম সিটিতে ঢুকতেই প্রবেশ পথে চোখে পড়বে সুবিশাল এক গেট। শ্রুতিত যে, সন্ধ্যা ঘনার সাথে-সাথেই নাকি সেই গেট বন্ধ করে দেওয়া হত। সেই রীতিকে ধরে রাখতে আজও পানাম সিটিতে সূর্যাস্তের সাথে সাথে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রবেশ পথ পার হলেই রাস্তার দুইধারে সারি সারি স্থাপনা চোখে পড়বে। নির্মাণশৈলীতে ইউরোপীয় স্থাপত্য আর সেইসাথে জগৎখ্যাত মোগল স্থাপত্য়শৈলীর কিছুটা সংমিশ্রন পরিলক্ষিত হয়। সারি সারি স্থাপনাগুলি এখনও হারানো নগরীর সেই জৌলুস নিয়ে সম্ভ্রমে নিয়ে ঠাই দাড়িয়ে আছে।
বর্তমানে পানাম সিটিতে ৫২ টি স্থাপনা টিকে আছে। যার মধ্যে রাস্তার উত্তরদিকে ৩১ টি এবং দক্ষিনদিকে ২১ টি স্থাপনা রয়েছে। অনেকগুলি স্থাপনা মেরামত করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। অনেকগুলির অবস্থা আবার নাজুক।
প্রতিটি ভবনের দিকে খেয়াল করলে মোগল আমলের স্থাপত্যের অনন্য দিকগুলি অনুধাবন করা যায়। বিশাল-বিশাল কলাম, কারুকার্যখচিত নকশা, কয়েকতলা বিশিষ্ট বিল্ডিং এক সমৃদ্ধ স্থাপত্যশিল্পকে স্বরন করিয়ে দেয়। কাছ থেকে গভীরভাবে চমৎকার কারুকার্যখচিত এসব স্থাপনা অনুধাবন করলে আপনি বিমোহিত হবেন। নিখুত হাতে তৈরি অসাধারন নকশায় সজ্জিত স্থাপনাগুলি সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
পথ ধরে হারানো নগরীর আরও যত গভীরে প্রবেশ করবেন, দুপাশের সারি-সারি বাড়িঘরগুলি আপনার কাছে ততই পুলকিত আর রহস্যাময় মনে হতে থাকবে। আমার মনে হয়েছিল আমরা যেন বর্নীল সে ইতিহাসের উদ্ভাসিত সে পৃষ্ঠাই পদচারনা করছি ।
প্রাচীন এই নগরীতে কুপের দেখা মিলবে, মিলবে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় নানা নিদর্শন। টাইম মেশিন ছাড়াই কল্পশক্তি দিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন কয়েক শতাব্দী পূর্বে। নগরীর পানি সরবারাহের জন্য দুইধারে খাল ও পুকুরের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। নগরীর চারপাশ ঘিরে একটি খাল রয়েছে। সেটার নামও বেশ মায়াময়ী-“পঙ্খীরাজ”। যা ইঙ্গিত দেয় এই নগরীর বাসিন্দারা কতটা অভিজাত আর সুরুচিশীল ছিলেন।
বসবাস উপযোগী আবাসিক ভবন ছাড়াও এখানে দেখতে পাবেন উপাসানালয়, গোসলখানা, দরবার কক্ষ, পান্থশালা, গির্জা, মন্দির, মঠ, খাজাঞ্চিখানা, পুরানো জাদুঘর, গুপ্তপথ। আরও দেখা মিলবে ৪০০ বছরের পুরানো টাকশাল বাড়ি থেকে শুরু করে ইংরেজ আমলের নীল কুঠি পর্যন্ত।
সোনারগাঁও জমিদার বাড়ি এবং লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর
পানাম সিটি থেকে সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর মাত্র আধা কিমিঃ দুরে। চাইলে পানাম সিটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি অসাধারন কারূকার্যখচিত জমিদার বাড়ি ও জাদুঘরটিতে ঘুরে আসতে পারেন।
সাদা চকচকে মার্বেল পাথরে নির্মিত ঈসা খাঁ জমিদার বাড়ি (বড় সর্দার বাড়ি) ও সামনের বিশাল দীঘি আপানাকে চোখের পলক ফেলতে বাধা দিবে। আহা! কি অসাধারন এক স্থাপত্য, সত্যিই মুগ্ধ করার মতো।
লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরের ঠিক সামনেই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের করা একটি ভাস্কর্য দেখতে পাবেন। সেটিও বেশ চমৎকার। লোকশিল্প জাদুঘরের বিভিন্ন গ্যালারিতে দেখা মিলবে দূর্লভ সব সংগ্রহ। এসবের মধ্যে রয়েছে পোড়া মাটির টেরাকোটা, নকশীকাথা, জামদানী, বিভিন্ন প্রকার নৌকার মডেল, লোকজ বাদ্যযন্ত্র- একতারা, সেতারা, বেহালা ইত্যাদি।
গোয়ালদী মসজিদ
মোল্লা হিজবর আকবর আলী খান, সুলতান আলাউদ্দিন শাহর রাজত্বকালে মসজিদটি তৈরি করেন। পানাম থেকে মাত্র ১ কিমি উত্তর-পশ্চিমে মসজিদটি অবস্থিত।
বাংলার তাজমহল
এটিও নারায়নগঞ্জে অবস্থিত। পানাম সিটি থেকে অটোতে চড়ে শর্টকাট পথে অল্প সময়ে আগ্রার তাজমহলের আদলে নির্মিত বাংলার তাজমহলে ঘুরে আসা যায়।
পানাম সিটি ট্যুর প্লান
বাংলার প্রাচীন রাজধানীর অলিগলিতে আপনার মতো ভ্রমণপিপাসুদের পদচারনার সারথী হতে ভ্রমণচারী আপনার পাশে। ট্রিপের আদ্যপান্ত নিয়ে ভ্রমণচারী নিয়ে এল স্বতন্ত্র দিকনির্দেশনা।
পানাম নগর কিভাবে যাবেন?
প্রথমে ঢাকার গুলিস্তানে চলে আসুন। মাওলানা ভাসাণী হকি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে সোনারগাঁও-গামী বাস ছাড়ে। বাসে উঠে পড়ুন। সোনারগাঁওের মোগরাপাড়া বাস স্টপেজে নেমে পড়ুন, উল্লেখ্য বাসগুলির শেষ গন্তব্যও এই স্টপেজে।
এরপর ফুট-ওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে, ওপার থেকে ২০-৪০ টাকা ভাড়ায় অটো বা রিকশা করে পানাম সিটিতে পৌছে যেতে পারবেন। ২০-৪০ টাকা ভাড়াতে পানাম সিটি নিয়ে যাবে। আপনার সুবিধার্থে নিচে আমি গুলিস্তানের মাওলানা ভাসানি হকি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে যে যে বাস সোনারগাঁওের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় সেগুলোর তালিকা দিয়ে দিচ্ছি-
- বোরাক-এসি(৬০ টাকা ভাড়া)
- দোয়েল(৪৫ টাকা ভাড়া)
- স্বদেশ(৪০ টাকা ভাড়া)
পুনশ্চঃ আপনাদের যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি আছে, ঢাকা থেকে স্বল্প দুরত্ব হওয়াই সেভাবেও আসতে পারেন।
সোনারগাঁয়ে কোথায় থাকবেন
সোনারগাঁও ঢাকা থেকে মাত্র ২৭ কিমি দূরে তাই স্বাচ্ছন্দে ঘুরে দিনেই ফিরে আসা যায়। তবে যারা ৪ টা স্পট -পানাম সিটি, সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদি মসজিদ এবং বাংলার তাজমহল ঘুরে দেখতে চান তারা চাইলে সোনারগাঁও থাকতে পারেন। সোনারগায়ে সন্তোষজনক মানের হোটেল পাবেন না।
তবে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের রেস্ট হাউজ এবং বেসরকারী গন বিদ্যালয় বেইজে ভাল সেবা পাবেন। আপনার সুবিধার্থে নিচে আমি কিছু হোটেলের নাম ও ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি।
সরকারী আবাসন
- জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, সোনারগাঁও উপজেলা কমপ্লেক্স। যোগাযোগঃ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, নারায়নগঞ্জ।
- বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন রেস্ট হাউজ। যোগাযোগঃ পরিচালক, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। ফোন- ০২৭৬৫৫৬৩৩১ ।
বেসরকারী আবাসন
- গন বিদ্যালয় বেইজ। যোগাযোগঃ অধ্যক্ষ, গন বিদ্যালয় বেইজ। যোগাযোগঃ ০১৭৭১২০০২৩০৪
- কলাপাতা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট। যোগাযোগঃ তত্বাবধায়ক, মোঃ মামুন সিকদার। ফোন-০১৭৬০১৪৪১৪৪
- ক্যাফে সোনারগাঁও হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, জাদুঘর ১ নং গেইটের বিপরীতে। যোগাযোগঃ তত্বাবধায়ক, মোঃ পিয়ার হোসেন। ফোনঃ ০১৮১৯৯৩২৬৯৬
- তাজমহল হোটেল, জাদুঘর ১ নং গেইট। তত্বাবধায়ক, মোঃ নাসির উদ্দিন। ফোনঃ ০১৭১২২৮৯৭০৮
পানাম সিটিতে কোথায় খাবেন?
সোনারগাঁ বাস স্টপেজে প্রচুর রেস্টুরেন্ট পাবেন- পৌছেই সেগুলো থেকে নাস্তা সেরে নিতে পারেন। পানাম সিটির মেইন গেটে রাস্তার বিপরীতে সারি সারি অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট পাবেন- সেগুলো থেকে লাঞ্চ করে নিতে পারবেন।
আবার সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরের সামনেও ভালো মানের কতকগুলো ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট পাবেন। আমার কাছে লোকশিল্প জাদুঘরের সামনের রেস্তোরাগুলো অপেক্ষাকৃত ভাল মনে হয়েছে। তবে দামের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে মূল্য যাচাই করে নিলে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে খাবার পেয়ে যাবেন।
পানাম সিটি যেতে কেমন খরচ লাগবে?
যাতায়াত
আমি এসি বাসে যাওয়া আসার খরচ হিসাব করে দিচ্ছি-
সোনারগাঁও যাওয়া + আসাঃ ৬০+৬০=১২০ টাকা
সোনারগাঁও থেকে রিকশাযোগে পানাম সিটি ৪০+৪০=৮০ টাকা
খাবার খরচ
সকালের নাস্তাঃ ২০ টাকা
দুপুরের লাঞ্চ= ১২০ টাকা
প্রবেশ টিকেট
পানাম সিটিতে প্রবেশ টিকেট মূল্য= ১৫ টাকা।
সর্বমোটঃ ৩৫৫ টাকা
উল্লেখ্য এসি বাস এবং সোনারগাঁও থেকে অটোযোগে গেলে ৮০-১০০ টাকা খরচ কমে যাবে। সেক্ষেত্রে তখন মোট খরচ দাড়াবে ২৭৫ টাকা-২৫৫ টাকা।
পানাম নগর বন্ধ ও খোলার সময়সূচি
নগরের সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হল রবিবার। সোমবারে অর্ধদিবস খোলা থাকে, এদিন দুপুর ২-টার পর থেকে পানাম সিটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
পানাম নগর সপ্তাহের বাকীদিনগুলিতে সকাল ৯ টা-৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
এছাড়া সকল সরকারী ছুটিতে পানাম নগর সম্পূর্ন বন্ধ থাকে।
পানাম নগর প্রবেশ টিকিট মূল্যু
পানাম নগরে প্রবেশ করতে আপনাকে টিকিট কাটতে হবে। প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর নির্ধারিত টিকিট মূল্য দেশী দর্শনার্থীদের জন্য ১৫ টাকা এবং বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য ১০০ টাকা।
পানাম নগরের নামকরন কিভাবে হলো? (পেছনের ইতিহাস)
পানাম সিটির পত্তন ঘটে ১৫ শতাব্দীতে বার ভূইয়ার শাসনমলে। ঈসা খাঁ সোনারগাঁয়ে বাংলার রাজধানী স্থাপন করেন।
যদিও পানাম নগরের নামকরনের ইতিহাস জানা যায়নি তবে ধারনা করা যায় বার ভূইয়ার শাসনামলে বাংলার রাজধানী হয় সোঁনারগাও। এরপর থেকে সোনারগাঁও বাংলার ব্যাবসার প্রানকেন্দ্রে পরিনত হয়। ইংরেজ আমলে আনুমানিক অষ্টাদশ শতকে কলকাতা-সোনারগাঁও এর ব্যাবসায়ীরা সোনারগাঁও “পানাম নগর” বলে পরিচিত এই স্থানটিতে এসে থাকতে শুরু করে। ধারনা করা হয় তখনই এর নামকরন করা হয় পানাম নগর।
ভ্রমণচারী টীপস
- দুপুরের লাঞ্চ করার আগে দাম চেক করে নিবেন; অন্যথায় ঢাকার চেয়ে কয়েকগুন মূল্য গুনতে হবে।
- ঢাকা থেকে অল্প দূরত্ব হওয়াতে পানাম সিটিতে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসাই উত্তম।
ভ্রমণচারীরা বারবার যা জিজ্ঞেস করে
বাংলার সর্বপ্রথম রাজধানী কোনটি?
বাংলার প্রথম রাজধানী সোনারগাঁয়ের পানাম নগর।
পানাম নগর কিভাবে যাব?
গুলিস্তানে চলে আসুন। গুলিস্তানের মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম থেকে দোয়েল, বোরাক বা স্বদেশ যেকোনো একটি বাসে উঠে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া বাস স্টপেজে নামুন। রাস্তা পার হয়ে, ওপার থেকে রিকশা বা অটোতে করে পানাম নগর চলে আসুন।
পানাম নগরে প্রবেশ টিকেট মুল্য কত?
বাংলাদেশীদের পানাম নগরীতে প্রবেশ টিকিট মূল্য ১৫ টাকা।
পানাম নগর কোথায় অবস্থিত?
পানাম নগর ঢাকার অদূরে নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় অবস্থিত। সোনারগাঁও এর মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা থেকে ২ কিমিঃ এবং লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর থেকে ০.৫ কিমিঃ দূরত্বে।
পানাম নগর নিয়ে শেষকথা
পানাম নগরীর সমৃদ্ধ ইতিহাস বাংলাদেশী হিসাবে আমাদের গর্বের বিষয়। জগৎখ্যাত মসলিন কাপড়, জামদানী শাড়ীর আতুড় ঘরখ্যাত প্রাচীন বাংলার বানিজ্যিক নগরী ও সর্বপ্রথম রাজধানীতে না ঘুরে আসলে বাঙালী সত্তার বিস্তৃত এক অংশ অনাবৃত থেকে যাবে।
হারানো নগরীর অলিতে-গলিতে ধ্বংসপ্রায় দালান-কোঠার ধাঁর ঘেষে অস্তায়মান সূর্যের হাহাকার আলোয় নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বাঙালী সত্ত্বার গভীরে যাওয়ার আনন্দ উপভোগ করে আসুন।