ঝুলন্ত ব্রিজ, ক্যাবল কার, পাহাড়, সাফারি পার্ক, মিনি চিড়িয়াখানা, পিকনিক স্পট এসব একসাথে আসলেই মনে পড়ে যায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের কথা। পর্যটন বোর্ডের আওতাধীন এই পর্যটন কেন্দ্রে গিয়েছিলাম ২০২১ এর শেষের দিকে। সাজানো গোছানো সুন্দর এই স্পটটা নিয়ে আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতার আলোকে জানাব দুচোখ দিয়ে যা দেখেছি সবকিছু!
লেখাটি পুরোটা পড়তে থাকুন, কেননা একদম শেষে জানাব একদম স্বল্প খরচে কিভাবে যাবেন এবং মেঘলার পুরোটা ঘুরে দেখবেন।
আরম্ভ করি?
অবস্থান
মেঘলা বান্দরবান শহর থেকে ১০ কিলোমিটার অদূরে অবস্থিত।
ভ্রমণ স্থানের নাম | মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র |
অবস্থান | বান্দরবান, বাংলাদেশ |
ধরন | দর্শনীয় স্থান |
বান্দরবান শহর থেকে দূরত্ব | ১০ কিমি |
প্রচলিত নাম | মেঘলা |
যাবার উপায়
প্রথমে বান্দরবান শহরে চলে আসুন। বান্দরবানের সাথে সারাদেশের সড়ক পথে যোগাযোগ আছে। তাই বাসে করে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই বান্দরবান যেতে পারবেন। এই পোস্টে আমি ঢাকা থেকে কিভাবে বান্দরবান যাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বান্দরবান শহরে পৌছানোর পর সেখান থেকে মেঘলা যেতে হলে আপনাকে সিএনজি কিংবা চাঁদের গাড়ি নিতে হবে। বান্দরবান শহর থেকে সাতকানিয়া অভিমুখে _ সড়ক ধরে ১০ কিমি পূর্বে এগোলেই গন্তব্যটিতে পৌছে যাবেন। সড়কটির একদম পাশেই পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান।
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে যা দেখবেন
এককথায় বলতে গেলে এখানে যা যা আছেঃ
- দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রিজ
- লেক
- উঁচু নিচু পাহাড়
- শিশু পার্ক
- সাফারি পার্ক
- চিড়িয়াখানা
- পিকনিক স্পট
- কেবল কার
- প্যাডেল বোট
পর্যটন কেন্দ্রটির মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে কিছুক্ষন হাটতে থাকলে একটু সামনে নিচে নামার সিড়ি পাবেন। সিড়ি দিয়ে নামার পর ডান সাফারি পার্ক দেখতে পাবেন। ডান দিক থেকে একটু পেছনে গেলেই মিনি চিড়িয়াখানা ও জাদুঘর দেখতে পাবেন।
আর নাক বরারর এগুলোই স্বচ্ছ জলে ঘেরা লেকটা। এই লেকের উপরেই ঝুলন্ত ব্রিজ। চারপাশে গাছপালা ও পাহাড়। শান্ত শ্যামল একটা পরিবেশে। এমন পরিবেশে বিকেল বেলায় ঝুলন্ত ব্রিজে দাঁড়িয়ে মনোরম পরিবেশটা এক নজরে দেখতে পাবেন। চাইলে পাহাড়ের উপরে দাড়িয়েও অভুতপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

“ইটস নট এন্ড দিয়ার ইয়েট!” ক্যাবল কারেও চড়তে পারবেন এখানে। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড় পর্যন্ত লেকের উপর দিয়ে চলে গেছে ক্যাবল কারের লাইন।
পিকনিক করতে চাচ্ছেন? ২ টি পিকনিক স্পটও রয়েছে এখানে। সেক্ষেত্রে রান্নার ব্যবস্থা আছে? হ্যা, রান্নার জন্য এখানে রয়েছে “বনভোজনের রান্নাঘর” নামক সংরক্ষিত ফ্যাসিলিটি।
রেস্টের জন্য রেস্টহাউজ আর খাবার জন্য ক্যান্টিনও রয়েছে এখানে যাতে করে প্রয়োজনমত বিশ্রাম নিতে পারেন এবং খাবার নিয়ে চিন্তা করতে না হয়।
পুরো পর্যটন কেন্দ্রটি একদম সুচিন্তিতভাবে সাজানো। আমি মনে করি, পাহাড় ঘেরা স্বচ্ছতোয়া জলে ঘেরা লেক আর পাহাড়ি গাছপালার সবুজ বেষ্টন মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের পরিবেশকে মনোরম করে তুলেছে। আপনি যদি, বান্দরবান ও শহরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে যান, এই পর্যটন কেন্দ্রটি ঘুরে না আসাটা নির্বুদ্ধিতা হবে।
সতর্কতা
বয়স্ক কিংবা শারিরিকভাবে নিজেকে উপযুক্ত মনে না হলে, সিড়ি ধরে নিচে নামতে যাবেন না। কেননা সিড়িটা বেশ ঢালু, সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে বেশ বেগ পেতে পারেন।
কম খরচে কিভাবে যাবেন?
মেঘলা গেলে নিঃসন্দেহে বান্দরবানের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোও একসাথে ঘুরে আসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে এবং আপনিও তেমনটায় চাইবেন।
কিন্তু, আপনি পরিবারের সাথে কিংবা একসাথে কয়েকজন মিলেও যদি যান, তবে বান্দরবান ট্যুরে গিয়ে যে নিজের মতো করে ট্যুর প্লান ও ম্যানেজ করতে ঝামেলায় পড়বেন।
আর যদি, একসাথে বড় গ্রুপে না যান, সেক্ষেত্রে তো বিশাল খরচের ব্যপার আছে।
কিন্তু, ভাল ব্যপার হলো ভ্রমণচারী বান্দরবান শহরের আশেপাশের ৫ টি স্থান নিয়ে কম খরচে ট্যুর প্যাকেজ অফার করছে। আমাদের সাথে গেলে আপনার একটায় কাজ তা হলো, দর্শনীয় স্থানগুলোতে গিয়ে উপভোগ করা- বাকী সব ঝামেলা আমাদের।
শুনতে ভাল লাগছে? তাহলে, হয়ে যাক ভ্রমণচারীর সাথে বান্দরবান ট্যুর?
মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের আশেপাশের কোথায় ঘুরতে যেতে পারেন?